নতুন নিয়মে বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ করা হবে। পুলিশ বাহিনীকে আরও বেশি জনমুখী করার লক্ষ্যে কনস্টেবলদের গুণগত মান ও পেশাগত উৎকর্ষতা বাড়ানোর বিকল্প নেই বলে মনে করেন পুলিশের নীতি নির্ধারকরা।
এই লক্ষ্যে পিআরবি) ১৯৪৩-এর সংশ্লিষ্ট কিছু প্রবিধান সংশোধন করা হয়েছে। ১৪০ টাকায় ট্রেজারি চালান জমা দিয়ে আরো সর্তকতা অবলম্বন করে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ পেতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ (বিপিএম) বার।
আজ ৯ই সেপ্টেম্বর রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নতুন উদ্যোগে কনস্টেবল নিয়োগের কথা জানিয়েছেন রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান।
তিনি বলেন, সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে নতুন নিয়ম ও পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে। এতে সাতটি ধাপ অতিক্রম করার পরেই নিয়োগ চুড়ান্ত করা হবে। ধাপগুলো হচ্ছে প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং, শারীরিক মাপ ও সক্ষমতা যাচাই, লিখিত পরীক্ষা, মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা, প্রাথমিক নির্বাচন, পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্তকরণ। নিয়োগে প্রতারক ও দালালদের থেকে সচেতন থাকতে সকলকে অনুরোধ জানান তিনি। এ জন্য জেলা পুলিশ কঠোর মনিটরিং করবে।
তিনি আরো বলেন, নতুন এই নিয়োগ সম্পর্কে আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে ধারণা দিতে বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েব সাইটে ১৫মিনিটের একটি ভিডিও দেওয়া রয়েছে। রাজবাড়ী জেলা পুলিশের ফেসবুক পেজেও ভিডিওটি আপলোড করা রয়েছে।
একটি সূত্র থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, এ মাসের যেকোন দিন কনস্টেবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করবেন। পুলিশ সদর দপ্তর তা যাচাই-বাছাই করে দেখবে। প্রার্থী মিথ্যা বা অসম্পূর্ণ তথ্য দিলে নিয়োগের যে কোন পর্যায়ে নিয়োগ বাতিল হবে। কাগজপত্র যাচাইয়ের জন্য যোগ্য ব্যক্তির আবেদনকারীদের মোবাইল নাম্বারে একটি ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড পাঠানো হবে। এরপর শারীরিক সক্ষমতা ও কাগজপত্র যাচাইয়ের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের অনলাইনে একটি কার্ড দেওয়া হবে। এরপর প্রার্থীদের উচ্চতা, ওজন ও পুরুষ প্রার্থীদের বুকের মাপ নেওয়া হবে। শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষার আগে প্রার্থীকে ইনডেমনিটির ঘোষণাপত্র নামে একটি ফরম পূরণ করতে হবে। ফরমে ওই প্রার্থী শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ্য আছে বলে ঘোষণা দিয়ে স্বাক্ষর করবেন। এরপর সাতটি ধাপে শুরু হবে শারীরিক পরীক্ষা। তা হলো- দৌড়, পুশ আপ, লং জাম্প, হাই জাম্প, ড্র্যাগিং ও রোপ ক্লইমিং। এ ধাপের কোনটিতে অকৃতকার্য হলে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যাবে না। শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষায় উত্তীর্নদের সব ডকুমেন্ট নিয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজী , সাধারণ গণিত ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে ৪৫ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ১৫ নম্বরের মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় নম্বরের ভিত্তিতে বিজ্ঞপ্তি অনুসারে জেলাওয়ারি মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রাথমিকবাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে প্রশিক্ষনের জন্য মনোনীত করা হবে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের সদস্য সংখ্যা দ্ইু লাখ ১২ হাজার। এর মধ্যে এক লাখ ২৩ হাজার কনস্টেবল রয়েছে।