॥মইনুল হক মৃধা॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ এক্স-রে মেশিনটি দীর্ঘ আড়াই বছর যাবত বিকল হয়ে পড়ে আছে।
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিকল হওয়া ওই মেশিনটি মেরামত করা হয়নি এখন পর্যন্ত। পাশাপাশি সেখানে অপর একটি নতুন এক্স-রে মেশিন আনা হয়েছে গত বছরের ডিসেম্বরে। তখন থেকে নতুন ওই মেশিনটিও এক্স-রে কক্ষের ভিতরে তালাবদ্ধ হয়ে আছে।
এতে সরকারী ওই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা অনেক রোগী বিপাকে পড়ছেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় এক্স-রে পরীক্ষা করাতে না পেরে তারা বাইরের বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
জানাযায়, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালটি ব্যস্ততম দৌলতদিয়া-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। স্বাস্থ্যসেবা পেতে উপজেলা এলাকার প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল এই হাসপাতাল। সেখানে প্রতিদিন গড়ে চার শতাধিক বিভিন্ন রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এক্স-রে মেশিন অকার্যকর থাকায় সরকারী ওই হাসপাতালে স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে গড়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫জন মুমূর্ষু রোগীকে অসহ্য শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে ব্যস্ততম রাস্তা পার হয়ে কয়েকগুণ বেশি টাকা দিয়ে এক্স-রে করাতে হচ্ছে। এতে রোগীরা যেমন ভোগান্তিতে পড়ছেন, তেমনি এসব এক্স-রের জন্য গুনতে হচ্ছে কয়েকগুণ টাকা।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ব্যবসায়ী রেজাউল করিম বলেন, এক্সরে মেশিন নষ্ট থাকায় বেশি সমস্যায় পড়েছে আমাদের মত গরিব রোগীরা। তাদের বাইরে থেকে ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা দিয়ে এ সেবা নিতে হচ্ছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান(রেডিওলজী) মোঃ কামরুল হাসান জানান, জাপানের তৈরী ‘একোমা-১০০’ মডেলের এনালগ এই এক্স-রে মেশিনটি গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রথম স্থাপন করা হয় ১৯৮৫ সালে। তখন থেকে এই হাসপাতালে আসা বিভিন্ন রোগী প্রয়োজনীয় এক্স-রে পরীক্ষা সেবা পেয়ে আসছিল। কিন্তু বৈদ্যুতিক কারণে হঠাৎ যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় ২০১৯ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারী থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই এক্স-রে মেশিনটি বিকল হয়ে পড়ে আছে। অনেক চেষ্টা করেও বিকল মেশিনটি সচল করা সম্ভব হয়নি। পরে গত বছরের ডিসেম্বরে সেখানে নতুন একটি এক্স-রে মেশিন আনা হয়। কিন্তু মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের অভাবে নতুন মেশিনটি চালু করা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ নিতাই কুমার ঘোষ বলেন, এক্স-রে মেশিন বিকল থাকায় হাসপাতালে আসা অনেক রোগীর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিতে পারছি না।
গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ মোস্তফা মুন্সী জানান, হাসপাতালে আসা অনেক রোগী চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় এক্স-রে পরীক্ষা করাতে না পেরে তারা বাইরের বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। তাই নতুন আনা এক্স-রে মেশিনটি দ্রুত সময়ের মধ্যে চালু করা খুব জরুরী।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আসিফ মাহমুদ বলেন, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের অভাবে নতুন এক্স-রে মেশিনটি চালু করা যাচ্ছে না। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।