বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
রাজবাড়ী জেলায় নৌকার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন পরিচালনায় যুবলীগের কমিটি গোয়ালন্দে মহাসড়কের পাশে বন বিভাগের ৫৪১টি গাছ কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা রাজবাড়ীতে নিরাপদ অভিবাসন ও দক্ষতা উন্নয়ন শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত রাজবাড়ী থিয়েটারের আয়োজনে চার দিনব্যাপী নাট্যোৎসব শুরু রাজবাড়ী কালেক্টরেটের পক্ষ থেকে এডিসি মাহাবুর রহমানকে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান রাজবাড়ী জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এডিসিকে বিদায় সংবর্ধনা পাংশায় অস্ত্র মামলায় গ্রেফতারকৃত কৃষক লীগ নেতা হেনা মুন্সী শ্রীঘরে পাংশায় নিপা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসচেতনতায় র‌্যালী ও আলোচনা সভা পাংশায় ইটভাটার মালিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে সোয়া তিন ঘন্টা ফেরী চলাচল বন্ধ

দৌলতদিয়া ও দেবগ্রামে নদী ভাঙ্গনের হুমকীতে দুই হাজার পরিবার॥উদাসীন পানি উন্নয়ন বোর্ড

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন, ২০২০, ১২.৩৩ এএম
  • ৩৬৭ বার পঠিত

॥সোহেল মিয়া॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার পরিবার পদ্মা নদী ভাঙ্গনের হুমকীর মুখে রয়েছে।

প্রতি বছরই নদী পাড়ে বসবাসরত পরিবারগুলো নদী ভাঙ্গনের সম্মুখীন হলেও এবারের বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এরই মধ্যে নদী ভাঙ্গন শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু ভাঙ্গন প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করেনি। এতে নদী পাড়ের মানুষসহ জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

নদী ভাঙ্গনের শিকার ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ভাঙ্গন রোধে অগ্রীম কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করে না পানি উন্নয়ন বোর্ড। যখন ভাঙ্গনের তীব্রতা চরম পর্যায়ে চলে যায় তখন নামমাত্র ভাঙ্গন রোধ করার ব্যর্থ চেষ্টা চালায় তারা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভাঙ্গন রোধের সেই কাজের গুণগত মান নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।

সরেজমিনে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ছাত্তার মেম্বারের পাড়া, নতুন পাড়া, বেপারী পাড়া, লালু পাড়া ও মুন্সী পাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইতিমধ্যেই নদীর পাড়ের ভাঙ্গন শুরু হয়ে গেছে। চোখের সামনেই নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে বসতভিটা ও ফসলী জমি। হুমকীতে রয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা। অনেকেই নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।

ছাত্তার মেম্বারের পাড়ার বাসিন্দা আজহার পাটোয়ারী(৭০) ও সিদ্দিক পাটোয়ারী(৪২) বলেন, প্রতি বছরই নদী ভাঙ্গে। তবে এবার বর্ষা মৌসুম শুরুর প্রথম দিকেই ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে এখনই জরুরী ভিত্তিতে কাজ করা প্রয়োজন।

একই পাড়ার মোঃ জহিরের স্ত্রী মাজেদা বেগম(৫৫)  বলেন, রাতে ঘুমাতে পারি না। শুধু চিন্তা হয়-এই বুঝি স্বামীর ভিটে বাড়ীটা নদীতে খেয়ে ফেলল। ঘুম থেকে জেগেই বসে থাকি নদীর পাড়ে।

দৌলতদিয়ার ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি গত প্রায় ১০ বছর ধরে নদী ভাঙ্গন দেখছি। আমার চোখের সামনেই নদীগর্ভে চলে গেছে হাজার হাজার হেক্টর কৃষি জমি, বসত ভিটাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙ্গন রোধে সময় মতো কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় আরও বেশী ক্ষতি হয়। ভাঙ্গন বেশী শুরু হলে তখন কাজ করলে কোন লাভই হয় না। তারপর আবার যে কাজ করে তাও একেবারে ফাঁকিবাজী।

দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য কাশেম খান বলেন, এই ইউনিয়নের প্রায় ৬শত পরিবার চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। আমি সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি পরিবারগুলোকে রক্ষা করতে যত দ্রত সম্ভব উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য।

দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় ১৫শত পরিবার রয়েছে নদী ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে। গত বছর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের প্রায় ৩শত পরিবারের ঘরবাড়ী নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে বার বার প্রশাসনের কাছে নদী শাসনের কাজ করার জন্য আবেদন করলেও কোন ফল পাচ্ছি না।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবায়েত হায়াত শিপলু বলেন, নদী ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে যারা রয়েছে তাদের তালিকা তৈরী করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানদেরকে বলা হয়েছে। এছাড়া ভাঙ্গন রোধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ করা হয়েছে।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, ভাঙ্গন রোধে আপাতত অগ্রীম কোন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয়। তবে দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের উজানে শীঘ্রই ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ও ৬ মিটার জিও টিউব খুব দ্রুত ফেলা হবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved  2019 Rajbarisangbad
Theme Developed BY ThemesBazar.Com