॥হেলাল মাহমুদ॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার রুপিয়াট মাদ্রাসা-মৌরাট পি.ও সড়কের গোপালপুর-কলিমহর বাজার অংশের রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম চলছে।
পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ হাসান ওদুদ নিজেই ঠিকাদার হিসেবে প্রকল্পের কাজটি করছেন। গত ১০/৭/২০১৯ তারিখে তাকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
কাজেই সাইট পরিদর্শন করে বিছানো ইটের খোয়া ও কার্পেটিংয়ের পাথর অত্যন্ত নি¤œমানেরসহ নানা অনিয়ম পেয়ে পাংশা উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মোঃ হাবিবুর রহমান গত ২৮শে নভেম্বর ঠিকাদার উপজেলা চেয়ারম্যানকে পত্র দিয়ে নি¤œমানের ওই ইটের খোয়া-পাথর অপসারণ করার জন্য বলেছেন- অন্যথায় ঠিকাচুক্তি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর সুপারিশ প্রেরণ করা হবে বলে উল্লেখ করেছেন।
পাংলা উপজেলা প্রকৌশলীর উক্ত পত্রে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, সরেজমিনে সাইট পরিদর্শনকালে দেখা যায় যে, (১) রুপিয়াট মাদ্রাসা-মৌরাট পি.ও সড়ক (চেঃ ০০-৩৭৮৭ মিঃ) রক্ষণাবেক্ষণ কাজের চেইনেজ ৩৪২৫-৩৭৪০ মিঃ এর মধ্যে আপনার (পাংশা উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদ হাসান ওদুদের) ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিছানোকৃত ডইগ এর ইটের খোয়ার মান নি¤œমানের (২) কার্পেটিং কাজে মজুতকৃত ৬সস ংঃড়হব পযরঢ়ং মালামালের মধ্যে টহংঢ়বপরভরবফ পি-গ্রাভেল রয়েছে (৩) কার্পেটিং কাজের ২৫সস নরমাল কার্পেটিং এবং ৭সস সীলকোটের মালামালের ল্যাবরেটরী এলজিইডি, রাজবাড়ী কর্তৃক গ্রেডেশনের অনুপাত নির্ধারণ ব্যতিরেকে আপনার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিজে নিজে প্রি-মিক্স(পাথর) করা হয়েছে- যা ঠিকাচুক্তির পরিপন্থী। এমতাবস্থায় অতিসত্ত্বর সড়কের চেইনেজ ৩৪২৫-৩৭৪০ মিঃ এর মধ্যে বিছানোকৃত টহংঢ়বপরভরবফ ডইগ এর ইটের খোয়া এবং কার্পেটিং কাজে পি-গ্রাভেল মিশ্রিত ৬সস ংঃড়হব পযরঢ়ং অপসারণপূর্বক অবহিত করার জন্য বলা হলো, অন্যথায় ঠিকাচুক্তি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর সুপারিশ প্রেরণ করা হবে।
গত ২রা ডিসেম্বর দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠিকাদার(উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদ হাসান ওদুদ) কাজটি বন্ধ রেখেছে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের সাথে বলা বললে তারা সড়কের কাজে নি¤œমানের ইটের খোয়া-পাথরসহ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা কুদ্দুস মন্ডল বলেন, সড়কটির খানা-খন্দ ভরাটসহ বিছানোর কাজে অতি নি¤œমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। যেভাবে সড়কটির রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করা হচ্ছে তাতে কিছুদিনের মধ্যেই সড়কটি আবার ভেঙ্গে চুরে যাবে। আমরা ঠিকমতো সড়কটির কাজ করার দাবী জানাচ্ছি।
পাংশা উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, আমার পরিদর্শনকালে নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই অতিসত্ত্বর বিছানো ইটের খোয়া ও স্টোন চিপস অপসারণ করার জন্য চিঠি দিয়েছি। ঠিকাদার তা না করলে ঠিকাচুক্তি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর সুপারিশ প্রেরণ করা হবে।
সড়কটির কাজের ঠিকাদার পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ হাসান ওদুদ বলেন, কাজটি সংশোধনের ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী কর্তৃক আমাকে পত্র দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী কাজ করা হবে।
এ ব্যাপারে রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ জিল্লুল হাকিম বলেন, সরকার অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমি নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নের জন্য অনেক কষ্ট করে কাজগুলো নিয়ে আসি, কিন্তু ঠিকাদাররা অনিয়ম করে। ওই সড়কে অনিয়ম হয়ে থাকলে তা বরদাস্ত করা হবে না। ঠিকাদার যেই হোক অনিয়ম ও দুনীতির আশ্রয় নিলে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহবান জানাচ্ছি।