॥রবিউল খন্দকার মজনু॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার জৌকুড়া ও পাবনার নাজিরগঞ্জ রুটে ২০ দিন ধরে ফেরী চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এতে নৌরুট ব্যবহারকারী যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তাদেরকে ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চ ও ট্রলারে তীব্র ¯্রােত থাকা নদী পার হতে হচ্ছে।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগের অন্যতম একটি মাধ্যম জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুট। এই রুট দিয়ে প্রতিদিন ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও সিরাজগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলার যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহন পারাপার হয়। কিন্তু নদীতে তীব্র ¯্রােতের কারণে সড়ক ও জনপথ বিভাগ গত ২২শে সেপ্টেম্বর থেকে ফেরী চলাচল বন্ধ করে দেয়। যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চে ও ট্রলারে নদী পার হতে পারলেও তাদেরকে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে।
গতকাল ১২ই অক্টোবর সকালে সরেজমিনে জৌকুড়া ফেরী ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, এই রুট দিয়ে নদী পারাপারের জন্য বিভিন্ন যানবাহন এসে ঘাট বন্ধ পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত বোঝাই লঞ্চ ও ট্রলারে নদী পার হচ্ছে। ট্রলারে মানুষের পাশাপাশি রিক্সা-ভ্যান, মোটর সাইকেল, অটোরিক্সাসহ ছোট ছোট অন্যান্য যানবাহনও পারাপার করা হচ্ছে।
মাগুরা থেকে আসা একজন মোটর সাইকেল আরোহী বলেন, পাবনার নাজিরগঞ্জে আমার শ্বশুর বাড়ী। তাই মাঝে-মধ্যেই এ পথে যাতায়াত করতে হয়। জরুরীভাবে আমার নাজিরগঞ্জে যাওয়া প্রয়োজন। কিন্ত এখানে এসে দেখি ফেরী চলাচল বন্ধ। এখন ট্রলারে নদী পার হতে হবে। তাও কত সময় বসে থাকতে হবে কে জানে। আমার মতো আরও অনেক মানুষকে এমন ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
নিয়মিত যাতায়াতকারী গামছা বিক্রেতা হকার ইব্রাহীম মোল্লা বলেন, ব্যবসার প্রয়োজনে প্রতি সপ্তাহে পাবনার শাহাজাদপুরে যেতে হয়। আজও যাচ্ছি। প্রায় দেড় ঘন্টা বসে আছি ঘাটে। ট্রলার কখন ছাড়বে বুঝতে পারছি না। চালক বলছে, যখন যাত্রী পূর্ণ হবে তখনই ট্রলার ছেড়ে যাবে।
ঘাটের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, ২০ দিন যাবৎ এ ঘাটে ফেরী চলাচল বন্ধ রয়েছে। যাত্রীদের ভোগান্তির পাশাপাশি আমাদের বেচাকেনাও অনেক কমে গেছে। কবে নাগাদ ফেরী চলাচল শুরু হবে জানি না।
ট্রলার চালকরা জানান, নদীতে ট্রলার চালাতে তাদেরও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। মাঝে-মধ্যে ট্রলার চরে আটকে যাচ্ছে। নদীতে নেমে ট্রলার ধাক্কা দিয়ে অন্য স্থান দিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। জৌকুড়া থেকে পাবনার নাজিরগঞ্জের দিকে বেশী চর পড়েছে।
রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ধাওয়াপাড়া-নাজিরগঞ্জ রুটে ২টি ইউটিলিটি(ছোট) ফেরী দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হতো। ফেরীগুলো প্রতিদিন সকাল ৮টা, ৯টা, দুপুর সাড়ে ১২টা, আড়াইটা ও রাত ৯টায় ধাওয়াপাড়া ঘাট থেকে যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন নিয়ে পাবনার নাজিরগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যেত।
ধাওয়াপাড়া ঘাটের ইজারাদারের প্রতিনিধি সোহেল রানা জানান, গত ২২শে সেপ্টেম্বর থেকে এই রুটের ফেরী চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। যাত্রীরা লঞ্চ ও ট্রলারে নদী পারাপার হচ্ছে। তবে ভাড়া একটু বাড়ানো হয়েছে। আগের ৪০ টাকার স্থলে বর্তমানে ৫০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে।
জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ রুটের ফেরী চলাচলের তত্বাবধানে থাকা রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী(চঃ দাঃ) কে.বি.এম সাদ্দাম হোসেন বলেন, পদ্মার নদীতে ¯্রােতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় গত ২২শে সেপ্টেম্বর থেকে ফেরী চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা ফেরী চলাচল শুরুর চেষ্টা করছি। নদীর ¯্রােত কমে গেলেই ফেরী চালু করা হবে।