॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী জেলায় এ বছর ৪৩০টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এই পূজা মন্ডপগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
গতকাল ১৮ই সেপ্টেম্বর দুপুরে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে পূজার নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয়ে এক প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় জানানো হয়, এবার রাজবাড়ী জেলার মোট ৪৩০টি দুর্গা পূজার মধ্যে সদর উপজেলায় ১০৪টি, গোয়ালন্দ উপজেলায় ২৩টি, পাংশা উপজেলায় ১০১টি, কালুখালী উপজেলায় ৫৩টি ও বালিয়াকান্দি উপজেলায় ১৪৯টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এগুলোর মধ্যে বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের ৪শ’ প্রতিমার ও বহরপুর ইউনিয়নের ১৪হাত উচ্চতার দুর্গা প্রতীমার আকর্ষণীয় পূজা অনুষ্ঠিত হবে, যে পূজা দুইটি দেখতে ব্যাপক দর্শনার্থী সমাগম হবে।
জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগমের সভাপতিত্বে সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সালাহউদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোহাম্মদ আশেক হাসান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোবাশ্বের হাসান, রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ড্যান্ট মোঃ আহসান উল্লাহ, রাজবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার কামরুল ইসলাম গোলদার, ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুর রহমান, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডাঃ পারিজাত কুমার পাল, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ্ত চক্রবর্তী কান্ত, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গণেশ মিত্র, সদর উপজেলা শাখার সভাপতি অরুণ কুমার সরকার, গোয়ালন্দ উপজেলা শাখার সভাপতি বিপ্লব ঘোষ, বালিয়াকান্দি উপজেলা শাখার সভাপতি রামগোপাল চট্টোপাধ্যায় ও পাংশা উপজেলা শাখার সভাপতি নির্মল কুমার কুন্ডু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা ও দুর্গা পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি দেশ। এদেশে সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করে এবং সকল উৎসব পালন করে থাকে। কিছুদিন পরই এদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা উদযাপিত হবে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রাজবাড়ী জেলার মন্ডপগুলোতে আনন্দমুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, পৌরসভা, আনসার বাহিনী ও বিদ্যুৎ বিভাগসহ সংশ্লিষ্টরা একযোগে কাজ করবে। পূজা শুরুর দিন থেকে বিসর্জন পর্যন্ত প্রতিটি পূজা মন্ডপের নিরাপত্তা বিধানের জন্য জেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহ দায়িত্ব পালন করবে। পূজা চলাকালে মোবাইল কোর্ট কাজ করবে। পূজা মন্ডপগুলো পরিদর্শন ও তদারকির জন্য গঠিত কমিটি ও পরিদর্শক টিমের সদস্যগণ দায়িত্ব পালন করবেন। পূজা কমিটিগুলোকেও নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক রাখা ও জেনারেটরের ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পৌর এলাকার পূজাগুলোতে যাওয়ার রাস্তায় সমস্যা থাকলে পৌরসভা সেগুলো ঠিক করে দিবে। বিসর্জনের ক্ষেত্রে সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সকল প্রতীমা বিসর্জন দিতে হবে। বিশেষ দু’একটি ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হলে সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে জানালে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসন, পুলিশ ও বিদ্যুৎ বিভাগের পৃথক কন্ট্রোল রুম থাকবে। কন্ট্রোল রুমের সাথে যোগাযোগের নম্বর পূজা কমিটিগুলোকে সরবরাহ করা হবে। এবারের দুর্গা পূজাগুলোর জন্য সরকারীভাবে ২১২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে, এগুলো অচিরেই বিতরণ করা হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে রাজবাড়ীতে সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে আনন্দঘন পরিবেশে এবার আমরা পূজা উদযাপন করবো।