॥স্টাফ রিপোর্টার॥ ত্যাগের মহিমায় যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে গত ২১শে জুলাই মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়েছে।
অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশঙ্কার মধ্যেই এবারের ঈদ উদযাপিত হয়। মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ঈদকে ঘিরে যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস থাকার কথা তা এবারও ম্লান করে দিয়েছে মহামারি কোভিড-১৯।
অদৃশ্য শত্রু মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় দেড় বছর পর এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবার রাজবাড়ী শহরের রেলওয়ে কেন্দ্রীয় ঈদগাঁহ ময়দানে সীমিত পরিসরে ঈদের প্রধান জামাতের আয়োজন করা হয়।
রাজবাড়ী শহরের রেলওয়ে কেন্দ্রীয় ঈদগাঁহ ময়দানে সকাল ৮টায় ঈদুল আযহার প্রধান জামাতের জন্য সময় নির্ধারণ ছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের ২৫ মিনিট আগেই প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৭টা ৩৫মিনিটে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যে নামাজ শুরু হলেও কিছুক্ষণের শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বৃষ্টির আগাম পূর্বাভাস থাকা স্বত্ত্বেও রাজবাড়ী পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ঈদ জামাতের প্যান্ডেলে বৃষ্টির পানি রোধে তাবু বা ত্রিপলের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ফলে জামাতে অংশগ্রহণকারীরা বৃষ্টিতে ভিজে নামাজ আদায়ে বাধ্য হন। বৃষ্টির কারণে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই নির্ধারিত সময়ের ২৫মিনিট আগে জামাত শুরু হওয়ায় শত শত মুসুল্লী এবারের প্রধান ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারেননি।
এছাড়াও সকাল ৮টায় ঈদুল আযহা’র প্রধান জামাতের সময়সূচী জানিয়ে শহরে মাইকিং বা প্রচারের তেমন কোন ব্যবস্থা না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সচেতন শহরবাসী। তবে জেলা তথ্য অফিসের কয়েকটি স্থানে দায়রাসা মাইকিং করতে দেখা গেছে।
রেলওয়ে কেন্দ্রীয় ঈদগাঁহ ময়দানের প্রধান ঈদ জামাতে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোঃ মাহাবুর রহমান শেখ, পৌরসভার মেয়র মোঃ আলমগীর শেখ তিতুসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাসহ সহস্রাধিক মুসুল্লী বৃষ্টিতে ভিজে নামাজ আদায় করেন। এতে ইমামতি করেন জজ কোর্ট জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোস্তফা সিরাজুল কবির।
এছাড়া রাজবাড়ীর পুলিশ লাইন জামে মসজিদ, সদর উপজেলা মডেল মসজিদ, আঞ্জুমান ই কাদেরীয়া মসজিদ, ৩নং বেড়াডাঙ্গা জামে মসজিদসহ জেলার অধিকাংশ মসজিদে করোনার সংক্রমণ বিস্তার রোধে সরকারী নির্দেশনার আলোকে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও ২০০১ সালে থেকে রাজবাড়ী শহরের রেলওয়ে ঈদগাঁহ ময়দানের বিশাল ঈদ জামাতে পৃথক ব্যবস্থায় মহিলাদের নামাজ আদায়ের প্রথা চালু করা হয়।
এদিকে রাজবাড়ী শহরের ৩নং বেড়াডাঙ্গা জামে মসজিদে (৪তলা বিশিষ্ট মসজিদে) সকাল সাড়ে ৭টায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পবিত্র ঈদুল আযহা’র জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদের ইমাম মাওলানা মোঃ মনির হোসেন এতে ইমামতি করেন। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দসহ এলাকার বিপুল সংখ্যক মুসুল্লী এই ঈদ জামাতে অংশগ্রহণ করে।
ঈদের নামায শেষে ঈদগাঁহ ও মসজিদে মুসল্লীরা বর্তমান করোনা ভাইরাসের মহামারি থেকে বাংলাদেশ ও বিশ্ববাসীকে রক্ষা, সর্বত্রে শান্তি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠার জন্য মহান আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে প্রার্থনা করেন।
তবে ঈদের নামাজ শেষে চির পরিচিত দৃশ্য মুসুল্লীদের হাত মেলানো ও কোলাকুলির দৃশ্য এবার চোখে পড়েনি। করোনার সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ থেকে বিরত থাকেন মুসুল্লীরা।
ঈদের নামাজ আদায় শেষে মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ অনুয়ায়ী পশু কোরবানী করেন।