॥স্টাফ রিপোর্টার॥ আলোচিত পর্দা কেলেংকারীর ঘটনায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের সাবেক দুই প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আ.স.ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী ও ডা. গণপতি বিশ্বাসকে দুর্নীতির দায়ে চাকুরী হতে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
গতকাল ১০ই সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত ৯ই সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে উপস্থাপিত এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব এর সার-সংক্ষেপে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে।
সুতরাং রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদনের মাধ্যমে উল্লিখিত দুই কর্মকর্তা চাকুরী হতে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হিসেবে পরিগনিত হয়েছেন।
এরআগে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পর্দা ও যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এক পর্দার দাম ৩৭ লাখ শিরোনামে গতবছর সেপ্টেম্বরে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়। এরপর পর্দা ও যন্ত্রপাতি কেনায় ১০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ এনে দুদক গত বছর ২৭শে নভেম্বর মামলা করে।
উল্লেখ্য, ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা এবং আর্থিক অনিয়মের ঘটনায় গত ২০শে আগস্ট হাইকোর্ট দুদককে এ বিষয়ে তদন্ত করে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে আদেশ দেয়। ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মেসার্স অনিক ট্রেডার্স ৫১ কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার ১৬৬টি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে।
অনিক ট্রেডার্স ৪১ কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার বিল পেলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১০ কোটি টাকা যন্ত্রপাতির দাম বেশি দেখানোসহ বিভিন্ন অসঙ্গতির কারণে বিল আটকে দেয়। এ কারণে ২০১৭ সালের ১লা জুন বকেয়া আদায়ে হাইকোর্টে একটি রিট করে অনিক ট্রেডার্স।
রিটের পর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের কাছে অনিক ট্রেডার্সের সরবরাহ করা ১০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতির একটি তালিকা চেয়ে পাঠান। ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক কামদা প্রসাদ সাহা ২০১৮ সালের ১০ই অক্টোবর ওই ১০ কোটি টাকার বিপরীতে দামসহ ১০টি আইটেমের যন্ত্রপাতির একটি তালিকা দেন।
এদিকে ২০১২ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত মোট ৫জন চিকিৎসক প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তারা হলেন- আস ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী, এবিএম শামসুল আলম, মোঃ ওমর ফারুক খান, গণপতি বিশ্বাস ও আবুল কালাম আজাদ। এরমধ্যে ওমর ফারুক খান মারা গেছেন।